ইলেকট্রন বিন্যাস কাকে বলে: শক্তিস্তরে ইলেকট্রনগুলো নিয়মমাফিক বিতরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সজ্জিত থাকাকে ইলেকট্রন বিন্যাস বলে। রসায়নের ধারণা অনুযায়ী, ইলেকট্রন তার কক্ষপথের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ইলেকট্রন সংখ্যার উপর ভিত্তি করে অরবিটালে প্রবেশ করে সজ্জিত থাকাকে ইলেকট্রন বিন্যাস বলে।
আমরা যারা রসায়ন অধ্যায়ন করি তারা হয়তোবা এটা মনে করতে পারি যে, ইলেকট্রন বিন্যাস হয়তোবা আমাদেরকে বের করতে হবে।
ইলেকট্রন বিন্যাস বলতে যে এটি আমাদেরকে বের করতে হবে এমনটি না বরং ইলেকট্রন বিন্যাস ইতিমধ্যে একটি মৌলের মধ্যে উপস্থিত থাকে।
কেননা, ইলেকট্রন বিন্যাস বলতে ইলেকট্রনের শয্যাকে বোঝানো হয়ে, যা বিশেষ নিয়ম অবলম্বন করে পরমাণুর মধ্যে বিচরণ করে।
পরমাণুর মধ্যে বিদ্যমান ইলেকট্রন গুলো যে, ছোটাছুটি ভাবে অবস্থান করে এমনটি না বরং এরা নির্দিষ্ট নিয়ম অবলম্বন করে পরিভ্রমণ করে।
অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রবিন্দু বিবেচনা করে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে এই সকল ইলেকট্রন গুলো পরিভ্রমণ করে যা পরস্পরের সাথে সজ্জিত থাকে।
ইলেকট্রন গুলো বিশেষ নিয়ম অবলম্বন করে নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বিশেষ নিয়মে সজ্জিত থাকে এই প্রক্রিয়া নাম ইলেকট্রন বিন্যাস।
আমরা ইলেকট্রন বিন্যাস করার নিয়ম সম্পর্কে যদি জানতে চায় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে ইলেকট্রন বিন্যাসের নীতি জানতে হবে। তবে ইলেকট্রন বিন্যাস করার নীতি সম্পর্কে জানার পূর্বে প্রথমে অরবিটালের ধারণা জেনে নিতে হবে যার মাধ্যমে ইলেকট্রন গুলো সজ্জিত থাকে।
ইলেকট্রন বিন্যাসে অরবিটালের ধারণা
রসায়ন বই হতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইলেকট্রন বিন্যাসে রয়েছে চারটি অরবিটাল যেমন: s, p, d, f এবং এদের ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে: s(2), p(6) , d(10), f(14).
ইলেকট্রন বিন্যাস আউফবাউ নীতি অনুযায়ী সাজানো হয়েছে, যেখানে ইলেকট্রন গুলো নিম্ন শক্তিস্তর পূরণ করে পর্যায়ক্রমে উচ্চ শক্তিস্তরে গমন করে। নিম্ন শক্তির স্তর ও উচ্চ শক্তির স্তরের ধারণা তাদের মান দেখে নির্ণয় করা যায়। কিভাবে শক্তির স্তরের মান বের করতে হয় চলুন জেনে নেই।
আর অবশ্যই আমাদেরকে এই শক্ত ইফতারের মান বের করতে জানতে হবে যে মান দ্বারা আমরা ইলেকট্রন বিন্যাস করতে পারব সঠিকভাবে।
কেননা যখন শক্তিস্তরের মান বের করতে পারবো তখন কোন শক্তিস্তর বড় এবং কোনটি ছোট বুঝে সঠিক নিয়মে ইলেকট্রন বসাতে পারবো।
মান নির্ণয়ের সূত্র হলো (n+l) এই দুইটির যোগফল।
- এখানে n হচ্ছে অরবিটালটির প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা। উদা: 1s2 এখানে 1 হচ্ছে n এর মান।
- এখানে l হচ্ছে অরবিটালটির সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা। উদা: 1s2 এখানে s হচ্ছে l এর মান।
সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মান হচ্ছে:
s p d f
0 1 2 3
যেহেতু প্রত্যেকটি শক্তিশ্বরের মানে নির্ণয়ের জন্য আমাদেরকে আলাদা আলাদা ভাবে সহকারে কোয়ান্টাম সংখ্যার মান ব্যবহার করতে হবে। তাই আমি এখানে সহকারে কোয়ান্টাম সংখ্যার মান গুলো উল্লেখ করেছি যেগুলো ব্যবহার করে আপনি যে কোন অরবিটালের শক্তি বের করতে পারবেন।
আর পরবর্তীতে বের করার মাধ্যমে আপনি খুবই সহজেই যেকোন ইলেকট্রন কোন অরবিটালে প্রথম প্রবেশ করবে তা বুঝতে পারবেন।
ইলেকট্রন বিন্যাসের নীতি বা আউফবাউ নীতি
আউফবাউ বা ইলেকট্রন বিন্যাসের নীতি হলো: রোমানদের বিদ্যমান ইলেকট্রন গুলো প্রথমে নিম্ন শক্তির সম্পন্ন অরবিটাল পূরণ করবে এবং পর্যায়ক্রমে উচ্চ শক্তিস্তরে গমন করবে।
ইলেকট্রন বিন্যাসের এ নীতি অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা রসায়নে ইলেকট্রন বিন্যাস করে থাকে বিভিন্ন মান নির্ণয়ের জন্য।
রসায়নে প্রথম দিকে যখন ইলেকট্রন বিন্যাস বের করা শিখি তখন উপযুক্ত কারণ বুঝতে পারি না কেন আমরা ইলেকট্রন বিন্যাস করছি।
আসলে আমরা ইলেকট্রন বিন্যাস তখন করে যখন কোন একটি মৌলের বন্ধন এবং যোজনীর সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে চাই।
আরো অনেক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বা অনেক বিষয় জানার জন্য আমরা মৌলটির ইলেকট্রন বিন্যাস করে থাকে প্রথমে।
আপনি যদি কখনো ইলেকট্রন বিন্যাস করে থাকেন তাহলে সর্বদা লক্ষ্য করবেন যে ইলেকট্রন গুলো প্রথমে নিম্ন শক্তি স্তর পূরণ করার চেষ্টা করে। আর যদি সম্পূর্ণরূপে পূরণ না করে তাহলে প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি ইলেকট্রন সেই স্তরে প্রদান করার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটায়।
ইলেকট্রন বিন্যাস করাতে আউফবাউ নীতি গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই নীতি অবলম্বন করে আমরা নির্ভুলভাবে ইলেকট্রন বিন্যাস করতে পারি।
আরও পড়ুন: ইলেকট্রন আসক্তি কাকে বলে?