ইলেকট্রন আসক্তি কাকে বলে: গ্যাসীয় অবস্থায় পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিস্তরে 1 মোল একক ঋণাত্মক চার্জযুক্ত আয়ন সৃষ্টি করতে নির্গত শক্তিকে ইলেকট্রন আসক্তি বলে। সহজ ভাষায়, কোন মৌলের ইলেকট্রন গ্রহণের যে প্রবণতা রয়েছে সেই ইলেকট্রন গ্রহণের প্রবণতা হচ্ছে ইলেকট্রন আসক্তি।
কোন মৌল যখন অন্য মৌলের ইলেকট্রন গ্রহণ করে এবং ইলেকট্রন গ্রহণের মাধ্যমে শক্তি অর্জন করে সেই শক্তি হচ্ছে ইলেকট্রন আসক্তি।
ইলেকট্রন আদান-প্রদান ছাড়া কখনো ইলেকট্রন বন্ধন গঠন সম্ভব নয় এবং ইলেকট্রন আসক্তি দ্বারা ইলেকট্রন আযানের মাধ্যমে বন্ধন গঠন সম্ভব।
অর্থাৎ বন্ধন গঠনের ক্ষেত্রে ইলেকট্রন আসক্তি বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে কোন একটি মৌলের ইলেকট্রন নিজের মধ্যে গ্রহণ করার জন্য।
পর্যায় সারণিতে এমন কিছু মৌল রয়েছে যারা নিজেকে স্থির করার জন্য ইলেকট্রন গ্রহণ করতে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে থাকে। আর এই সকল মৌলসমূহ সামান্য একটি সুযোগ পাওয়া মাত্র যেকোনো মৌলের ইলেকট্রন গ্রহণ করে শক্তি সঞ্চয় করে এবং এই প্রক্রিয়ায় হচ্ছে ইলেকট্রন আসক্তি।
ইলেকট্রন আসক্তি বলতে ইলেকট্রনের উপর আকৃষ্ট হওয়াকে বোঝানো হয়ে যার দ্বারা মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ করার ধর্ম প্রদর্শন করে।
অন্য যে কোন মৌলের ইলেকট্রনের নিজের মাঝে গ্রহণ করার রাসায়নিক যে ধর্ম রয়েছে সেই ধর্মের নাম হচ্ছে ইলেকট্রন আসক্তি।
এই ইলেকট্রন আসক্তির দ্বারা কোন মৌলের ইলেকট্রন গ্রহণ করার প্রবণতা বোঝানো হয় যায় এবং ইলেকট্রন গ্রহণের শক্তিকে বোঝানো হয়।
Electron addiction বা ইলেকট্রন আসক্তি কেন হয়?
ইলেকট্রন আসক্তি হচ্ছে পর্যায় সারণির একটি পর্যায়বৃত্ত ধর্ম এবং পর্যায় সারণির মান বৃদ্ধের সাথে সাথে ইলেকট্রন আসক্তির মান বৃদ্ধি ও হ্রাস পায়। প্রায় প্রত্যেকটি মৌল তার সর্বশেষ শক্তি স্তর পূর্ণ অথবা অর্থপূর্ণ করে সুস্থিত অবস্থা লাভ করতে চায়। আর এ অবস্থা লাভ করার জন্য একটি পরমাণু অন্য আরও একটি পরমাণুর কাছ থেকে ইলেকট্রন গ্রহণ করে থাকে।
আবার এই ইলেকট্রন আসক্তির উপর বিভিন্ন নিয়ামকের প্রভাব কাজ করে যার ফলে ইলেকট্রন আসক্তির মান কম হয় বা বৃদ্ধি পায়।
ইলেকট্রন আসক্তির ক্ষেত্রে যে সকল প্রভাব ক্রিয়া করে তার মধ্যে পারমাণবিক ব্যাসার্ধ বা পারমাণবিক আকার সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে।
ইলেকট্রন আসক্তির সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সুস্থিত অবস্থায় লাভ করা এবং এ অবস্থায় লাভ করার জন্য মূলত মৌল সমূহের মাঝে ইলেকট্রন আসক্তির প্রবণতা দেখা দেয়। এটি হচ্ছে ইলেকট্রন আসক্তির মূল কারণ যার কারণে বিশেষ কিছু পর্যায় সারণির মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ করতে চায়।
কেননা আমরা জানি, কোন মৌলের পারমাণবিক আকার হ্রাস পেলে ইলেকট্রন আসক্তির মান বাড়ে এবং অবশ্যই এটি প্রভাব হিসেবে কাজ করছে।
আর যখন কোন মৌলের পারমাণবিক আকার বৃদ্ধি পায় তখন উক্ত মৌলের ইলেকট্রন আসক্তি বেড়ে যায় যা ইলেকট্রন আসক্তির জন্য প্রভাবক।
শেষ কথা:
ইলেকট্রন আসক্তি কাকে বলে এবং ইলেকট্রন আসক্তি কেন হয় বা নিয়ামকের প্রভাব নিয়ে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে তথ্য।
আজকের পোস্টটি দ্বারা বলা যায়, ইলেকট্রন গ্রহণ করা যে প্রবণতা কিছু মৌলের মধ্যে দেখা যায় সেই প্রবণতা হচ্ছে ইলেকট্রন আসক্তি।
ইলেকট্রন আসক্তির কারণে মৌল গুলোর মধ্যে ইলেকট্রন বিনিময়ের মাধ্যমে বন্ধন গঠন করা সম্ভব হয়, যা রসায়নের বিষয়। রসায়ন বলতে বিক্রিয়াকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং বিক্রিয়া করার জন্য ইলেকট্রনের আদান-প্রদান করতে হয়ে যায় ইলেকট্রন আসক্তির দ্বারা কিছুটা সংঘটিত হয়।
প্রত্যেকটি মৌল স্থির অবস্থা প্রদর্শন করতে চায় এবং স্থির অবস্থা সংগঠন করার জন্য কিছু মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ করার প্রবণতা দেখায়।
আর ইলেকট্রন গ্রহণ করার মাধ্যমে মৌলগুলো তার স্থির অবস্থার প্রদর্শন করার চেষ্টা করে যা ইলেকট্রন আসক্তি মাধ্যমে সম্ভব হয়।
এটি দ্বারা বলা যায়, ইলেকট্রন আসক্তি একদিকে যেমন বন্ধন গঠন করতে সাহায্য করে ঠিক অপরদিকে মৌলের স্থির অবস্থা প্রদর্শন করাতে সাহায্য করে। আর এই ইলেকট্রন আসক্তির দ্বারা একসঙ্গে রসায়নের দুটি বিষয় সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়েছে যেটি হচ্ছে বন্ধন গঠন করা এবং স্থির অবস্থান প্রদর্শন করা।
আরও পড়ুন: নিউট্রন কাকে বলে?