ইলম কাকে বলে? ইলম কত প্রকার ও কি কি?

ইলম কাকে বলে: ইসলামী শরীয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান এবং কুরআন ও হাদিসে উল্লেখিত তথ্য সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান ধারণ করাকে ইলম বলে। ইলম শব্দের অর্থ জ্ঞান, জানা, অবগত হওয়া, বিদ্যা, শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।

ইলম হলো একটি আরবি শব্দ এবং ইলমের গুরুত্ব অপরিসীম আমাদের জীবন সঠিকমতো অতিবাহিত করার জন্য।

এই ইলম হলো ইসলামের বিধি-বিধান, কুরআন ও হাদিসের জ্ঞান এবং কোন বস্তুর প্রকৃত অবস্থা উপলব্ধি করা।

ইলম হচ্ছে ইসলামী শরীয়তের যাবতীয় জ্ঞান, কুরআন ও হাদিসে উল্লেখিত তথ্য সম্পর্কে স্পষ্ট অভিজ্ঞতা। প্রত্যেকটি মুসলিমকে ইলমের শিক্ষা অর্জন করতে হবে কেননা ইহার দ্বারা উক্ত মুসলমান ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা ও জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।

ইলম কাকে বলে
ইলম কাকে বলে?

অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কুরআন এর শিক্ষাকে ইলমে বলা হয়ে থাকে কেননা ইহার মাধ্যমে সম্পূর্ণ জীবন পরিচালনা করা সম্ভব হয় মানুষের।

তবে সম্পূর্ণ ভাষায় বলতে গেলে কুরআন ও হাদিসের আলোকে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করার প্রক্রিয়াকে সাধারণ অর্থে ইলম বলা হয়।

ইসলামে ইলমের গুরুত্ব অপরিসীম কেননা ইহার মাধ্যমে বান্দা ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অবগত হয় ও সে অনুযায়ী জীবন প্রচারণা করতে পারে।

কেউ যদি কোন বিষয় সম্পর্কে অবগত না থাকে তাহলে সতর্ক থাকবে কিভাবে এবং সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবেইবা কিভাবে।

অর্থাৎ এর জীবন প্রজন্ম না করতে গেলে আমাদেরকে অবশ্যই ইলমের শিক্ষা অর্জন করতে হবে যেখানে ইসলাম পরিপূর্ণরূপে নিহিত হবে। অর্থাৎ ইসলাম সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা স্পষ্ট ভাবে নিজের মাথায় আর তো করার জন্য ইলম দরকার হবে যা নিজের চেষ্টায় আমাদেরকে অর্জন করতে হবে।

ইলম কত প্রকার ও কি কি?

আমরা তো ইতিমধ্যেই ইলমের সম্পর্কে জানালাম তবে শিক্ষা অর্জনের উপর ভিত্তি করে ইলমের কিছু প্রকারভেদ পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ আমরা ইলেমাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করাতে পারে যেগুলো আমাদের শিক্ষার পার্থক্য অনুযায়ী সৃষ্টি হয়েছে বা শিক্ষার গুণ অনুযায়ী সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যেকটি ইলমের শিক্ষায় একই রকম হবে না এবং এই শিক্ষার পার্থক্য বা ভেদাভেদের উপর ভিত্তি করে ইলমের প্রকারভেদ রয়েছে।

আর অবশ্যই ইলম সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা অর্জন করার জন্য আমাদেরকে এর প্রকারভেদ সমূহ ও জীবনে এর কাজ সম্পর্কে জানতে হবে।

পার্থিব এবং ধার্মিক জীবনের উপর ভিত্তি করে অর্জিত ইলিমিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যথা:

  • দ্বীনি ইলম: ধার্মিক বিভিন্ন বিষয়ে অর্জিত জ্ঞান হচ্ছে দ্বীনি ইলম।
  • দুনিয়াবি ইলম: পার্থিব ও দুনিয়াবি জীবনে অর্জিত জ্ঞান হচ্ছে দুনিয়াবি ইলম।

এগুলো হলো ইলমের কিছু প্রকারভেদ এবং ইহার দ্বারা এটি স্পষ্ট যে অবশ্যই আমাদের অর্জিত জ্ঞান ইলমের অন্তর্ভুক্ত হবে তবে পার্থক্য অনুযায়ী। অর্থাৎ যেখানে দ্বীনি ইলমের কথা উল্লেখ হয়েছে সেখানে অবশ্যই ইসলামিক সকল জ্ঞানের কথা উল্লেখ থাকবে যা আদর্শ ও কল্যাণকর জীবন ডেকে আনবে।

এর বিপরীত দিকে দুনিয়াবী যে শিক্ষা রয়েছে সেখানে মানুষ যতই আদর্শ জ্ঞান অর্জন করুক করার চেষ্টা করুক না কেন।

তবুও জীবন পরিচালনা করতে অনেক লোভী হয়ে উঠবে এবং ইসলাম সম্পর্কে তুচ্ছ জ্ঞানটুকু অর্জন করার সময় নাও পেতে পারে।

শেষ কথা:

ইলম কাকে বলে এবং ইলম কত প্রকার ও কি কি এই বিষয়ের উপর সম্পূর্ণ জ্ঞান-ধারণা এখানে উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি।

যদি ইলম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এরা বাংলা অর্থ হচ্ছে শিক্ষা, যা অর্জন করতে হয় নিজের চেষ্টায় ও পরিশ্রমের বিনিময়।

তবে ইসলামে ইলম বলতে শুধুমাত্র যে বিষয়টিকে বেশি করে চিহ্নিত করা হয়েছে সেটি হচ্ছে ইসলামিক জ্ঞান বা ইসলামিক শিক্ষা। অর্থাৎ ইসলামের যে সকল বিষয়, বিধি-বিধান ও জীবন পরিচালনার পন্থা রয়েছে তার সমষ্টিগত জ্ঞান অর্জন করার বিষয়টিকে ইলম বলা হবে।

যদিও ইলমের কিছু প্রকারভেদ রয়েছে যার উপর ভিত্তি করে আমরা দুনিয়াবী যে সকল পড়াশুনা রয়েছে সেগুলোকে ইলমের অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।

সর্বক্ষেত্রে ইসলাম ধর্মে বা ইসলামে ইলম বলতে ওই সকল জ্ঞানকে বেশি প্রাধান্য দিবে যে জ্ঞান দ্বারা ইসলাম সম্পূর্ণরূপে নিহিত হবে।

ইলম বলতে যে সেখানে শুধুমাত্র ইসলামিক জ্ঞান থাকবে এমনটি না বরং এখানে জীবন পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল আদেশ উল্লেখ থাকবে। আবার সেই সাথে জীবন থেকে কিভাবে লোভ,-লালসা, হিংসা,-বিদ্বেষ দূর করা যায় তা জানা সম্ভব হবে বা জ্ঞান অর্জন করা যাবে।

আমরা দুনিয়াবি যে সকল ইলম রয়েছে সেখানে দুনিয়া কিভাবে পরিচালনা করতে হয় তা জানতে পারি এবং দুনিয়া নিয়ে আঁকড়ে পড়ি।

দুনিয়া নিয়ে আঁকড়ে পড়ার ফলে আমরা যতই সুশিক্ষা অর্জন করি না কেন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে একটু বেইমানিতে লিপ্ত হয়ে পড়ি।

আর এটি অবশ্যই ইলমের শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয় এবং এটি অবশ্যই সকল কিছুতে প্রাধান্য পাবে না বা কোনখানে প্রশংসা পাবে না। তবে ইলমের যে মূল শিক্ষা অর্থাৎ ইসলামের শিক্ষা রয়েছে সেখানে সঠিক জ্ঞান অর্জন করার মাধ্যমে জীবনে কল্যাণ আনার জন্য শিক্ষা অর্জন করতে পারব।

আর যখন আমরা জীবনে কল্যাণ ও প্রশংসা অর্জন করার জন্য জ্ঞান অর্জন করতে পারব তখন আমাদের শিক্ষার্থী হবে আসল শিক্ষা।

আরও পড়ুন: শাফায়াত কাকে বলে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top