অ্যানায়ন কাকে বলে: ঋণাত্মক আধান বিশিষ্ট অধাতব পরমানুকে অ্যানায়ন বলে। অ্যানায়ন শব্দের অর্থ হলো ঋণাত্মক বা নেগেটিভ।
আর যেহেতু পরমাণুর ক্ষেত্রে পরমাণুতে চার্জ রয়েছে কিন্তু এই চার্জ পরিবর্তন হতে পারে বন্ধনে আবদ্ধ হলে।
পরমাণু যখন সাধারণ অবস্থায় থাকে তখন এই চার্জ অনুভূত হয় না তার কারণ হলো পরমাণুর নিউক্লিয়াছে ঠিক যে কয়টি প্রোটন থাকে নিউক্লিয়াসের বাইরে সে কয়েকটি ইলেকট্রন থাকে যার কারণে পরমাণু সামগ্রিকভাবে চার্জ শূন্য অবস্থায় থাকে।
কিন্তু পরমাণু যদি এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাহলে পরমাণুতে ঋণাত্মক চার্জের পরিমাণ বেড়ে যাবে। কিন্তু পরমাণু যেহেতু প্রোটন গ্রহণ কিংবা প্রোটনের আদান-প্রদান করতে পারবে না তাই প্রোটন সমান সমান অবস্থায় থাকবে।আর ইলেকট্রনের চার্জ যেহেতু ঋণাত্মক আর প্রোটনের চার্জ ধনাত্মক।
তাই ইলেকট্রন গ্রহণ করা হলে পরমাণুতে ইলেকট্রনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। আর আমরা জানি যে ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জে চার্জত।
আর তাই ইলেকট্রনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে পরমাণুর মধ্যে ঋণাত্মক চার্জের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এটা স্পষ্ট।
আর যদি কোন পরমাণুর মধ্যে ঋণাত্মক চার্জের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে সেই পরমাণুতে অ্যানায়ন হয়।
অ্যানায়ন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা
আমরা জানি যে, প্রতিটি পরমাণু চায় সর্বশেষ শক্তিস্তরে নিষ্ক্রিয় ইলেকট্রন অবস্থায় থাকতে, এর জন্য পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন করে।
আর অধাতু সমূহ এর ব্যতিক্রম নয় অধাতু সমূহ চায় তাদের সর্বশেষ শক্তি স্তরে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করতে।
যেহেতু অধাতু সমূহের সর্বশেষ শক্তি স্তরে অষ্টক অপেক্ষা সাধারণত এক দুই বা তিনটি ইলেকট্রন কম থাকে। তাই তারা সেই সংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহণ করার মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করতে পারে। আর অন্যভাবে বলা যেতে পারে যে এ সকল পরমাণুর ইলেকট্রন আসক্তির মান বেশি।
আর ইলেকট্রন গ্রহণের ফলে পরমাণুর মধ্যে অবস্থিত নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক প্রোটন সংখ্যা বাহিরের শক্তিস্তরের ঋণাত্মক আধান বিশিষ্ট ইলেকট্রনের মান বেশি হয়।
যার কারনে সামগ্রিকভাবে অধাতব পরমাণুসমূহ ঋণাত্মক আয়ন বিশিষ্ট হয়ে পড়ে এবং ঋণাত্মক আধান বিশিষ্ট হওয়ার কারণে অ্যানায়নের অন্তর্ভুক্ত হয়।
উদাহরণস্বরূপ: ক্লোরিন (Cl) পরমাণু তার সর্বশেষ শক্তি স্তরে একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে অষ্টক নিয়ম পূর্ন করার মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় গ্যাস আর্গনের (Ar) ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে। ক্লোরিন (Cl) পরমানুটি ঋণাত্মক আয়নে পরিণত হয়।
শেষ কথা:
অ্যানায়ন কাকে বলে এবং অ্যানায়ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাবে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি আজকের আমাদের এই আলোচনায়।
আমি আশা করি যে আপনি আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে পুরোটা সময় আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন অ্যানায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে।
অবশ্যই বন্ধনে কিছু কিছু মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ করে এবং ইলেকট্রন গ্রহণ করার মাধ্যমে উক্ত মৌলটি ঋণাত্মক আয়ন হয়।
আর এইভাবে যখন কোন মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়নে পরিণত হয় তখন উক্ত মৌলটি অ্যানায়নের অন্তর্ভুক্ত হয়।
আর অবশ্যই অ্যানায়ন হচ্ছে একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া যার উপর ভিত্তি করে বন্ধন গঠন হয় প্রত্যেকটি মৌলের মধ্যে। কেননা ইলেকট্রন ভাগাভাগি ছাড়া বন্ধন গঠন সহজে হবে না এবং ইলেকট্রন ফাঁকাভাবে করতে অ্যানায়ন প্রয়োজন রয়েছে অর্থাৎ ইলেকট্রন গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।
শুধুমাত্র ইলেকট্রন গ্রহণের যে প্রয়োজন রয়েছে বন্ধনে এমন নয় বরং ইলেকট্রনের ত্যাগ করার বিষয়টিও রয়েছে বন্ধন গঠনে।
আর এরকমভাবে ইলেকট্রন ত্যাগ করার বিষয়টি অ্যানায়ন অন্তর্ভুক্ত নয় বরং এটি হচ্ছে ক্যাটায়নের অন্তর্ভুক্ত এবং সেটা হবে ধনাত্মক চার্জযুক্ত।
আরও পড়ুন: ক্যাটায়ন কাকে বলে?