অষ্টক নিয়ম কাকে বলে: যৌগ গঠনের পর সর্বশেষ শক্তিস্তরে আটটি ইলেকট্রন থাকাকে অষ্টম নিয়ম বলে।
অনু গঠনকালে কোন মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন অথবা ভাগাভাগি করার মাধ্যমে সর্বশেষ শক্তিস্তরে মোট আটটি করে ইলেকট্রন ধারণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিসেবে ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করাকে অষ্টক নিয়ম বলা হয়।
অর্থাৎ বলতে গেলে, অষ্টক নিয়ম বলতে শুধুমাত্র আটটি ইলেকট্রন কে বোঝায় যা সর্বশেষ শক্তিরস্তরে বিদ্যমান থাকতে হবে।
কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সর্বশেষ শক্তির স্তরে যখন আটটি ইলেকট্রন যথাযথভাবে বিদ্যমান থাকে তখন সেটা অষ্টক নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হয়।
তবে প্রত্যেকটি মৌল যে সর্বদা অষ্টক নিয়ম অবলম্বন করে চলে এমন কখনো সম্ভব না বা সম্ভব হয়নি। বরং প্রত্যেকটি মৌলের মধ্যে কম বেশি অষ্টম নিয়ম পালন করার একটি আকাঙ্ক্ষা থাকে যার জন্য এরা ইলেকট্রন ভাগাভাগি করে স্থির বা নিষ্ক্রিয় হওয়ার আকাঙ্ক্ষা দেখায়।
অর্থাৎ প্রত্যেকটি মৌলের সর্বশেষ শক্তিশ্বরে যথাযথভাবে আটটি করে ইলেকট্রন নিয়ম অনুযায়ী ইলেকট্রন বিন্যাসের সাথে থাকে না।
বরং ইলেকট্রন ভাগাভাগি বা বন্ধন গঠনের মাধ্যমে এরা এদের অষ্টক নিয়ম পূরণ করে বা আটটি ইলেকট্রন পুরণ করে সর্বশেষ শক্তিশালী।
অষ্টক সম্প্রসারণ কি?
সংজ্ঞা অষ্টক সম্প্রসারণ কি: যৌগ গঠনের পর সর্বশেষ শক্তিস্তরে আটটি ইলেকট্রনের বেশি ইলেকট্রন থাকাকে অষ্টক সম্প্রসারণ বলে। অনু গঠনকালে কোন মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন অথবা ভাগাভাগি করার মাধ্যমে সর্বশেষ শক্তিস্তরে মোট আটটি ইলেকট্রনের অধিক ইলেকট্রন ধারণ করার মাধ্যমে অনু গঠন করাকে অষ্টক সম্প্রসারণ বলে।
এমন কিছু ক্ষেত্র দেখা যায় মৌল গুলোর মাঝে যা আমরা আশা করতে পারি না এবং তবুও ঘটনাটি বলে ঘটে থাকে।
এর মধ্যে একটি হলো অষ্টক সম্প্রসারণ এবং এটি সর্বদা মৌলের মধ্যে অষ্টক নিয়ম পূর্ণ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কথা ছিল।
কিন্তু বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে অষ্টক নিয়ম অতিক্রম করে বিভিন্ন মৌল নিজের ইলেকট্রন ধারণ করে থাকে। আর যখন অষ্টক নিয়মের উপর কোন মৌল ইলেকট্রন ধারণ করে অবস্থান করে তখন সেটিকে অষ্টক সম্প্রসারণ বলে থাকি আমরা।
এগুলো তো ছিল অষ্টক সম্প্রসারণ এর কিছু ধারণা এবং সেই সাথে এটি একটি ব্যতিক্রম বিষয় অষ্টক নিয়মের।
তবে অষ্টক নিয়মের আরো একটি ব্যতিক্রম বিষয় রয়েছে সেটি হচ্ছে অষ্টক সংকোচন এবং এখন আমরা জানতে চলেছি অষ্টক সংকোচন কি।
অষ্টক সংকোচন কি?
অষ্টক সংকোচন কি: যৌগ গঠনের পর সর্বশেষ শক্তিস্তরে ৮টি ইলেকট্রনের কম ইলেকট্রন থাকাকে অষ্টক সংকোচন বলা হয়। অনু গঠনকালে কোন মৌল ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন অথবা ভাগাভাগি করার মাধ্যমে সর্বশেষ শক্তিস্তরে মোট আটটি ইলেকট্রনের কম ইলেকট্রন ধারণ করার মাধ্যমে যৌগে পরিণত হওয়াকে অষ্টক সংকোচন বলে।
তাহলে এ বিষয়টি একটু স্বাভাবিকের মধ্যে পড়ে কেননা সর্বশেষ শক্তিশালী আঁটি ইলেকট্রন না পূর্ণ হতে পারে।
এটাই স্বাভাবিক এবং যখন সর্বশেষ শক্তিশালী কোন মৌলের ইলেকট্রন পূর্ণ হয়না তখন সেটিকে অষ্টক সংকোচন বলে আমরা ডাকি।
আমরা অষ্টক নিয়ম বলতে আটটি ইলেকট্রন কে বুঝিয়ে যা সর্বশেষ শক্তিশালী কোন মৌলের বিদ্যমান থাকলে হয়ে যায়।
তবে যদি আটটি ইলেকট্রনের ন্যূনতম একটিও কম থাকে সর্বশেষ শক্তিস্তরে কোন মৌলের তাহলে সেটি হবে অষ্টক সংকোচন।
শেষ কথা:
অষ্টক নিয়ম কাকে বলে এবং অষ্টক নিয়ম সম্পর্কে অন্যান্য সংজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
রসায়ন গবেষণা করার ক্ষেত্রে এবং ইলেকট্রন বিন্যাস অনুযায়ী মৌলের ধর্ম চিন্তিত করার ক্ষেত্রে অষ্টক নিয়ম অতি গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণত যৌগ গঠনের পর প্রায় প্রত্যেকটি মৌল নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পরিবেশে বিদ্যমান থাকতে চায়।
এই চাওয়াটা পূরণ করার জন্য প্রত্যেকটি মৌল যৌগ গঠনের পর তা সর্বশেষ শক্তিস্তরে মোট আটটি ইলেকট্রন গঠন করতে চায়। আর যৌগ গঠনের পর প্রায় প্রত্যেকটি মৌল সর্বশেষ শক্তিস্তরে আটটি করে ইলেকট্রন পূর্ণ করে। সর্বশেষ শক্তির স্তরে এইভাবে আটটি ইলেকট্রন পূর্ণ করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় অষ্টক নিয়ম।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে মৌলগুলো অষ্টক নিয়ম অবলম্বন না করে অষ্টক সংকোচন বা অষ্টক সম্প্রসারণ করে।
অষ্টক সংকোচন এবং অষ্টক সম্প্রসারণ এই দুটি হচ্ছে অষ্টক নিয়মের ব্যতিক্রম, যা অষ্টক নিয়ম এর চেয়ে কম বা বেশি।
অষ্টক নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই পোস্টটি ছিল এ পর্যন্তই এবং আশা করে অষ্টক নিয়ম সম্পর্কে আপনারা পরিপূর্ণ ধারণা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। ধন্যবাদ আমাদের এই পোস্টটির সাথে সর্বশেষ পর্যন্ত থাকার জন্য এবং জানার জন্য।
আরও পড়ুন: যৌগমূলক কাকে বলে?