অরবিটাল কাকে বলে: নিউক্লিয়াসের চারদিকে যে অঞ্চলে ইলেকট্রন প্রাপ্তির সম্ভাবনা ৯০ থেকে ৯৫% সে অঞ্চলকে অরবিটাল বলে। উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল এর আকার বৃত্তাকার ও উপবৃত্তাকার উভয় রকম হয়ে থাকে এবং এখানেই পরমাণুর সমস্ত ঋনাত্মক চার্জ সংরক্ষিত থাকে।
যেহেতু অরবিটালের মধ্যে ইলেকট্রন প্রাপ্তির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি তাই এটি স্থির কক্ষপথ হওয়ার পরেও ইলেকট্রন কে গতিশীল করে রাখে।
পরমাণুর ভেতরে যে ইলেকট্রন রয়েছে সে সকল ইলেকট্রন গুলো এই অরবিটাল এর মধ্যে অবস্থান করে এবং অরবিটাল বলতে উপশক্তিস্তর বোঝায়।
আমরা জানি প্রত্যেকটি পরমাণুর গঠনে রয়েছে শক্তিস্তর এবং শক্তিস্তর গুলোর মধ্যে রয়েছে আবার কিছু উপশক্তিস্তর যেগুলোকে অরবিটাল বলে।
পরমাণুর এমন একটি স্থান যে স্থানে ইলেকট্রনের ঘনত্ব অনেক বেশি হয়ে থাকে, পরমাণু সেই স্থানকে অরবিটাল বলে। আর পরমাণুতে উপস্থিত অরবিটাল সমূহ অনেক বেশি স্থির হয়ে থাকে তবে এই স্থির অরবিটাল ইলেকট্রন কে গতিশীল করতে সাহায্য করে থাকে।
আমরা জানি, পরমাণুর মধ্যে উপস্থিত প্রত্যেকটি অরবিটাল স্থির হয় কিন্তু স্থির হওয়া সত্ত্বেও এতে বিদ্যমান ইলেকট্রনের ঘনত্ব গতিশীল হয়।
ইলেকট্রন গুলো পরমাণুতে বারবার পরিভ্রমন করতে থাকে এবং এ পরিভ্রমণ করার জন্য তাকে গতিশীল হতে হয়। আর প্রমাণের মধ্যে উপস্থিত প্রত্যেকটি ইলেকট্রন কে গতিশীল করার জন্য এবং তার গতি ধরে রাখার জন্য অরবিটাল বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
উপশক্তিস্তর বা অরবিটালকে কি দ্বারা সূচিত করা হয়
আমরা পরমাণুতে উপস্থিত উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এদেরকে বিভিন্ন প্রতীক দ্বারা সূচিত করতে পারে।
আর এদের এ প্রতীক দ্বারা আমরা অরবিটাল সংখ্যা বা কততম অরবিটাল হচ্ছে এটা খুব সহজে চিহ্নিত করতে পারে বুঝার জন্য।
যে সকল উপশক্তিস্তর বা অরবিটাল সমূহ আমরা বিভিন্ন প্রতীক দ্বারা নির্দেশ করে থাকে, এই সকল প্রতীকের আবার নিজস্ব মান রয়েছে। আর এদের এই সকল মানের উপর ভিত্তি করে আমরা উক্ত শক্তিস্তর এর শক্তি সম্পর্কে অবগত হয় এবং ইলেকট্রন বিন্যাস করতে সুবিধা পাই।
আমরা অরবিটাল কি দ্বারা সূচিত করতে পারি বা অরবিটাল কি দ্বারা সূচিত করা হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- অরবিটালকে s, p, d, f দ্বারা সূচিত করা হয় এবং এরা নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ইলেকট্রন ধারণ করতে পারে।
- এখানে s এর ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে দুইটি, p এর ইলেকট্রন ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে ছয়টি।
- d এর ইলেকট্রন ধারন ক্ষমতা হচ্ছে দশটি এবং f এর ইলেকট্রন ধারন ক্ষমতা হচ্ছে ১৪ টি।
- m এর মোট মান দ্বারা উপশক্তিস্তরের মোট অরবিটাল সংখ্যাকে বোঝানো হয়, m এর সংখ্যক মান হচ্ছে (2l+1)।
এগুলো হচ্ছে প্রতীক যে প্রতীক গুলো দ্বারা আমরা অরবিটালকে সূচিত করে থাকে এবং নিচে এদের মান উল্লেখ করা হয়েছে অরবিটালের।
এই সকল মান দিয়ে আমরা উক্ত অরবিটালের শক্তি বের করতে পারে এবং তারপর নীতি অনুযায়ী ইলেকট্রন বিন্যাস করতে পারে।
শেষ কথা:
অরবিটাল কাকে বলে এবং অরবিটাল কি দ্বারা সূচিত করা হয় এ বিষয়ের উপর বিস্তারিত তথ্য এখানে দেওয়া হয়েছে।
যদি ইলেকট্রন বিন্যাস করতে চান তাহলে আপনাকে পূর্বে অরবিটালের মান নির্ণয় করতে হবে এবং এর জন্য অরবিটাল সম্পর্কে জানতে হবে।
উপশক্তিস্তর বলতে অরবিটালকে বোঝানো হয় এবং আমরা এই উপশক্তিস্তরের কথাটি হয়তো ইতিমধ্যে পরমাণু মডেলে শুনেছে। পরমাণুতে উপস্থিত নিউক্লিয়াসের আশেপাশের যে সকল অঞ্চলে ইলেকট্রন প্রাপ্তের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে, সেই অঞ্চলের নাম হচ্ছে অরবিটাল।
অরবিটাল নিজে স্থির থাকে সর্বদা এবং ইলেকট্রন কে গতিশীল রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে এবং কক্ষপথে ধরে রাখে।
অরবিট এবং অরবিটাল এর মধ্যে সবচেয়ে বড় যে পার্থক্য সেটি হচ্ছে অরবিটালে ইলেকট্রন প্রার্থীর সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশি।
কিন্তু ঠিক এর বিপরীত দিকে অরবিট রয়েছে এবং এই অরবিট এর মধ্যেই মূলত ইলেকট্রন গুলো বিরাজমান করে বা আবর্তন করে। অরবিটাল হচ্ছে উপশক্তিস্তর যেখানে ইলেকট্রন প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকে তবে এমন কোন সুনির্দিষ্ট স্থান বলা যাবে না যে এই স্থানে ইলেকট্রটি অবস্থান করবে।
কেননা ইলেকট্রন স্থির থাকে না, যে এর নির্দিষ্ট অবস্থান খুঁজে পাওয়া যাবে বরং সর্বদা গতিশীল থাকায় নির্দিষ্ট স্থান নেই ইলেকট্রনের।
আরও পড়ুন: অরবিট কাকে বলে?