অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কি: শিক্ষার কোন বিধি-বিধান, অনুশাসন অথবা পূর্ব পরিকল্পিত ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বহুল পরিবেশ থেকে লাভ করা শিক্ষাই হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা।
অর্থাৎ শিশু তার জন্মের পর কোন শিক্ষক ছাড়াই পরিবারের কাছ থেকে এবং সমাজের কাছ থেকে যা যা শেখে তাই হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা। উদাহরণ: কথা বলতে শেখা, খেলতে শেখা এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি।
এই অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না এবং কর্মকর্তার প্রয়োজন হয় না। তবে শিক্ষক হিসেবে পরিবার-পরিজনের দরকার হয় যাদের কাছ থেকে একটি শিশু প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করে এবং সে অনুযায়ী চরিত্র গঠন করে।
অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর সামাজিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায় এবং সেই সাথে শিশু সমাজকে ভালোভাবে চিনতে পারে। আর এরপর এই অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিশু প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য উপযোগী হয় ওঠে।
অর্থাৎ এই প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুকে অক্ষর জ্ঞান এবং ভাষাগত প্রয়োগিক দিক নিয়ে দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রদান করা হয়। কিন্তু এর জন্য শিশুর দরকার হয় নিজ ভাষা সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান এবং এটি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশু গ্রহণ করতে পারে।
এই অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য গুলো পূরণ করে শিশুর জ্ঞান বিকাশ ঘটে।
অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে এবং এই লক্ষ্য উদ্দেশ্য গুলো পূরণ করতে শিশু এই শিক্ষা গ্রহণ করে। এবং আমাদের না চাইতেই শিশু ও অনুষ্ঠানের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে এবং পরিবেশ ও বন্ধু বান্ধব সম্পর্কে অবগত হয়।
নিচে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহ বিশেষভাবে আপনার জন্য উপস্থাপন করা হলো:
- অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর সামাজিক পরিবেশের সম্পর্কে জ্ঞান বিকাশ ঘটে।
- এই শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিশুর খেলাধুলা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বারে এবং খেলাধুলা করার স্বাস্থ্যবান হয়।
- এই শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিশুর মধ্যে বন্ধু নিয়ে একটি জ্ঞানের বিকাশ ঘটে এবং বিশ্বাস বস্তুটিকে চিনতে পারে।
- অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর মূল্যবোধের ধীরে ধীরে বিকাশ ঘটে এবং এটি উচ্চ পর্যায়ে পর্যন্ত উঠতে পারে।
- আবার এই অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর শারীরিক, মানসিক গঠনের বিকাশ ঘটে থাকে।
এগুলো হলো অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গুলো পূরণ করাই হচ্ছে এই শিক্ষার কাজ।
অবশ্যই এই শিক্ষা অর্জন করে শিশুর অনেক কিছুর বিকাশ ঘটে এবং শিশু প্রাথমিক পর্যায়ে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য ক্ষমতা অর্জন করে।
অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা বৈশিষ্ট্য
এই সকল কিছুর উপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠানিক শিক্ষার আরো একটি বিষয় আমাদের মাঝে সুস্পষ্ট নয়। আর অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার সে বিষয়টি হচ্ছে এই শিক্ষার বৈশিষ্ট্য বা অনুষ্ঠানের শিক্ষার বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি।
নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য সমূহ আপনার জন্য উল্লেখ করা হলো:
- এই শিক্ষা লাভের জন্য কোন নির্দিষ্ট শিক্ষকের প্রয়োজন হয় না।
- শিক্ষার্থী নিজে নিজেই যা শিক্ষা অর্জন করতে পারে তাই অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা।
- এ শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী আশেপাশের পরিবেশের সাথে নিজেকে মিশ্রিত করে।
- সমাজে কিভাবে টিকে থাকতে হয় তার ধারণা লাভ করে।
- শিশুর কৌতুহল বৃদ্ধি করে এবং সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়।
- শিশুর মানসিক, সামাজিক, পারিবারিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটায়।
এগুলো হলো অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য এবং এই বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী শিশু তার জ্ঞানের বিকাশ ঘটায় ও মূল্যবোধ জাগ্রত করে।
এই অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশ ঘটে এবং নিজেকে চিনার মত একটি যোগ্যতা স্থাপন করতে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন: বৃত্তিমূলক শিক্ষা কি?